আমাদের সুবোধ পালিয়ে গেছে

প্রায় সময় পত্রিকার পাতায় বা অনলাইনে দেখতে পাই -ধর্ষণের গোপন ভিডিও ফাঁস লোকলজ্জায় গৃহবধূর আত্মহত্যা অথবা যুবতির অশ্লিল ভিডিও ফাঁস সামাজিক লজ্জায় যুবতির আত্মহত্যা।আচ্ছা ভিডিওগুলায় কি শুধু নারীটা উলঙ্গ হইছিল?পুরুষটা হয়নি? তাহলে সামাজিক লজ্জা বা লোক লজ্জা শুধু নারীটার জন্য কেন?পুরুষটার জন্য কেন নয়?নাকি পুরুষ জাতির লজ্জা নেই।আর আমাদের সমাজটারও বা কেন লজ্জা হবেনা?অশ্লিল পর্ণো দেখার অপরাধে।নাকি এ সমাজে মজা করে পর্ণো দেখার অনুমতি আছে।তারপর চায়ের টং বা সালিসি আদালতে সবাই মিলে বসে মেয়েটাকে শাস্তি দেয়া।মাথা নেড়া করে দেয়া। আর ধর্ষক মহাশয়কে মেয়েটাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া যাতে সারাজীবন রাত-দুপুরে ধর্ষণ করতে পারে।ছিঃ ভাবতেও খারাপ লাগে এমন নেংটা সমাজটায় আমরা বসবাস করি।আর আমাদের আধুনিক ফেসবুক প্রজন্ম তো কথায় কথায় লিংক খোঁজে।কোন নায়িকার লিংক ফাঁস হইছে তার খবর সব সময় রাখে।আমরা মজা করে পর্ণো দেখি মজাও লুটি তারপর সব শেষে বলে উঠি ছিঃ মেয়েটা কত খারাপ।আরে বলদ তুই যে ভিডিওগুলা দেখিস তার জন্য তুই খারাপ না?আবার বলাবলিও করিস এই মেয়ে এমন সেই মেয়ে তেমন।একবার প্রশ্ন করা দরকার তুই নিজে কেমন।আমাদের সামাজিক ও মানষিকতার এত অবক্ষয় কেন?তাহলে কি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় গলদ?হ্যা,আমাদের শিক্ষায় ই গলদ।আমরা পড়ি পাশ করার জন্য চাকরীর জন্য বড়লোক হওয়ার জন্য মানুষ হওয়ার জন্য আমরা পড়িনা।আমরা সম্মান নিতেও জানিনা দিতেও জানিনা।আমরা আসলে বর্বর।বর্বর না হলে কি সামান্য ফেসবুক পোষ্টে ধর্ম অবমাননার নাম করে নামাজ শেষে দলবল নিয়ে মানুষ হত্যায় মেতে উঠি?আমরা ফেসবুক,ব্লগে বড় বড় ন্যায়ের বাণী লেখি,পড়ি,শেয়ার করি কিন্তু বাস্তব জীবনে আমরা নিজেরাই মন্দ কাজে লিপ্ত থাকি।আমরা না ধার্মিক না নাস্তিক না বাঙালী জাতীয়তাবোধ সমৃদ্ধ। আমরা আসলে অশিক্ষিত,ভন্ড,মূর্খ। আমাদের সুবোধ পালিয়ে গেছে।এই সুবোধ কে এক মাত্র নতুন প্রজন্মই পারবে ফিরিয়ে আনতে।যদি আমাদের স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সচেতন হয়।এটা আমার ক্ষীণ আশা মাত্র।কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাগুরুরা এখন অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে।যে কয়েকজন আছে ওরা ধর্মান্ধ বা দলকানাদের চাপে মাটির সাথে লেপটে আছে।ওদের মেরুদণ্ড সোজা করা বড়ই কঠিন।তবুও আমরা আশাহত নই।সুবোধ আসবেই ফিরে এই বাংলার মাঠে ময়দানে প্রতিটি ঘরে প্রতিটি হৃদয়ে।।

লেখকঃ নাঈম আজিজ চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.