মুখস্ত নির্ভর শিক্ষিত জাতি .....

যারা সরকারী মেডিকেল ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় তারা সব কোচিং সেন্টারের ছাত্র।তাদের নিয়ে টানাটানি শুরু হয়।যাদের চান্স হলো না তারা জীবনেও কোচিং করে নাই।তাদের কেউ নিজেদের ছাত্র বলেই পরিচয় দেয়না।কিন্তু এ চান্স প্রাপ্ত সংখ্যা খুবই কম।আর চান্স না পাওয়ার সংখ্যাই বেশি। তাহলে কি করে কোচিং সেন্টারগুলো নিজেদের সাফল্যের বেসুরা গান শোনায়?এ কোচিং সেন্টারগুলোর নির্লজ্জ চিত্র দেখা যায় তাদের ওয়েবসাইট ও পেইজগুলোতে।মেডিকেল,ঢাবি,বুয়েট পাবলিকের ১ম ২য় ৩য় সহ সেরা সব ছাত্র সব গুলো কোচিং এর স্টুডেন্ট।কিন্তু আজ যদি একটা ছাত্রও কোচিং না করতো তাহলে একই সংখ্যক ছাত্র ছাত্রীরা মেডিকেল বুয়েট পাবলিকে পড়তো। এটাই সত্য।সীট কখনোই খালি থাকতো না। এই কোচিং কেন্দ্রিক ভাইয়া প্রথা চালু হওয়ার পর থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে এত নোংরামীর প্রচলন শুরু হলো।শিক্ষক শিক্ষকই।শিক্ষক কে ভাইয়া ডাকা শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রকৃত শিক্ষকরা অবহেলা অসম্মানের শিকার।কারণ পুলাপাইন মনে করে আমাদের স্কুল কলেজের স্যাররা আমাদের কাছে আজরাইলের মত আর কোচিং এর লিটন(রূপক অর্থে)ভাইয়া কত্ত ভালো। ভাইয়া শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও ভাইয়া ডাকতে পারি।ভাইয়া সব কিছু সর্টকাট শিখাই দে।বাহ্ আমাদের স্যার থেকে তো ভাইয়া ই ভালো।আজ থেকে অল্প কিছুকাল আগেও শিক্ষকরা ছিল ছাত্রদের আদর্শ শিক্ষকরাই প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিল।আর এখন অমুক কোচিং এর তমুক ভাইয়া হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আদর্শ।আগের সেই শিক্ষকরা কি এখন নাই?? অবশ্যই আছে।কিন্তু আমরা তাদের কাছে যাইনা।কারন তাদের সালাম দিতে হয় স্যার ডাকতে হয় তাদের সাথে কথা বলতে সম্মান দিতে শিখতে হয়।এত কিছু কে করবে,তার চেয়ে বরং কোচিং সেন্টারের চাঁপাবাজ ভাইয়া স্যাররাই ভালো। তাই এখনো সময় আছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন আনার।না হলে অচিরেই মুখস্ত নির্ভর শিক্ষিত জাতি গড়ে উঠবে,যাদের মেরুদণ্ডই থাকবেনা।
সবশেষে একটা গল্প বলি-আজ থেকে ২৫ বছর আগে করিম নামক একজন শিক্ষিত বেকার ছেলে শত শত ইন্টারভিউ তে টিকার পরেও তার চাকরী হলো না।শুধু ঘুষ দিতে না পারায় অথবা মামা চাচা না থাকার কারনে।সবশেষ করিম দেশের প্রতি তীব্র ঘৃণায় আমেরিকান ভিসায় দেশ ত্যাগ করে।আমেরিকাতে সে নিজেকে প্রমান করে সেখানেই বিয়ে করে সংসার করে।তার মেয়ে এলিটার জন্ম আমেরিকাতে সেখাই সে পড়ালেখা করে। আজ ২৫ বছর পর করিমের মেয়ে এলিটা এখন নাসার বড় বিজ্ঞানী হলো।এখন এ খবর ছড়িয়ে পড়লো বাংলা নিউজে।"বাংলাদেশী মেয়ে এখন নাসার বিজ্ঞানী"এ নিউজ দেখে বাঙালী মহা খুশী।আহা বাঙালী মেয়ে কত্ত মেধাবী!!আপনার বিবেক কে প্রশ্ন করুন এলিটার জন্যে কি বাঙালীর অহংকার শোভা পায়?? এভাবে আমরা অনেক মিথ্যে অহংকারীতে নিজেদের শান্তনা দেই।আর কত? ওহে বাঙালী-এলিটারা তোমাদের তৈরী না তোমাদের তৈরী Rj ঠ্যজ,শাহতাজ,টয়া নায়লা এরা।এবার তো নতুন কিছু ভাবো!!

No comments

Powered by Blogger.