কলাম্বিয়া স্পেস শাটল বিপর্যয় ও কল্পনা চাওলার কথা



কলাম্বিয়া স্পেস শাটল বিপর্যয় ও কল্পনা চাওলা 

কলাম্বিয়া স্পেস শাটল বিপর্যয় নামক ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারিতে। নাসার নভোখেয়াযান স্পেস শাটল কলাম্বিয়া ফিরছে পৃথিবীতে।এদিকে  আত্মীয়-স্বজন সবাই জড় হয়েছে নভোচারীদের স্বাগত জানাতে।অধীর উৎকণ্ঠায় সবাই। কি হবে কেউ জানেনা।সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই দুঃসংবাদ পেতে হয় তাদের। নভোখেয়াযানটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরপরেই বিস্ফোরিত হয়েছে। সাতজন নভোচারীর মাঝে সবাই মারা গেছেন।নেমে এলো নিস্তব্ধতা।


পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় টেক্সাস এবং লুইজিয়ানার আকাশে এটি ভেঙে পড়েছিল। নভোখেয়াযানকে উচ্চ তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করতে বিশেষ ধরনের ফোম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু উৎক্ষেপণের সময়ই এই ফোমের কিছুটা খসে গিয়ে বাম পাশের ডানায় আঘাত করে।এটি যখন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন গরম বাতাস ডানাটির ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবেশ করে এর কাঠামোটি নষ্ট করে দেয়। এক পর্যায়ে নভোযানটিই ভেঙে পড়ে।এটি মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে একটি করুন ঘটনা। এ মিশনে মোট সাতজন নভচারী ছিলেন। তারা হলেন যথাক্রমে-
  • রিক হাসব্যান্ড, কমান্ডার
  • মাইকেল এন্ডারসন, পেলোড কমান্ডার
  • ডেভিড ব্রাউন, মিশন স্পেশালিষ্ট
  • কল্পনা চাওলা, মিশন স্পেশালিষ্ট
  • লরেল ক্লার্ক, মিশন স্পেশালিষ্ট
  • উইলিয়াম ম্যাককুল, পাইলট
  • আইলান র‌্যামন, পেলোড স্পেশালি

এদের মাঝে ছিলেন একজন ভারতীয় নভোচারী। যার নাম কল্পনা চাওলা।কল্পনা চাওলা ১৯৬২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের কারনালে বসবাসকারী এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যার আজন্ম সাধ ছিল মহাকাশে যাওয়ার। তিনি তার বন্ধুদের বলতেন, মহাকাশে গিয়ে যদি তার মৃত্যুও হয় তাতে তার দুঃখ থাকবে না।সেই আজন্ম সাধটিই সেইদিন পূর্ণ হয়েছিল।কল্পনা চাওলা ভারতে জন্মগ্রহণকারী প্রথম মহিলা নভোচারী । ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের কারনালে বসবাস করতেন কল্পনার বাবা-মা। ১৯৬১ সালের ১লা জুলাই সেখানেই জন্ম হয় কল্পনার। মোট দু’টি মহাকাশ অভিযান অংশ নিয়েছিলেন তিনি।বাবা-মায়ের চার সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। পাঞ্জাব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়াশোনা শেষে করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান। মাস্টার্স ডিগ্রি নেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৮৮ সালে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর পাওয়ার লিফট কম্পিউটেশনাল ফ্লুয়িড ডাইনামিকস নিয়ে গবেষণা শুরু করেন নাসায়।এই মহান সাহসী নারীর প্রতি রইল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

বিজ্ঞানে ইতিহাসে কলাম্বিয়া স্পেস শাটল বিপর্যয় নামক ঘটনাটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।আত্মদানকারী সকল বিজ্ঞানী বেঁচে রইবেন বিজ্ঞানের প্রতিটি অর্জনে। সুপ্রিয় পাঠক,আসুন আমরাও কল্পনা চাওলার মতো নিজের ইচ্ছা ও কাজকে জীবনের মতই ভালোবাসি।

(তথ্যঃ ইন্টারনেট)




আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার লেখা কবিতা,গল্প,প্রবন্ধ,বিজ্ঞান ও গবেষণা বিষয়ক লেখা।আমরা আপনার প্রতিভাকে সবার কাছে প্রকাশ করতে চাই। আমাদের ফেসবুক পেইজে https://www.facebook.com/TalentBanglaMedia/?ref=bookmarks ও ওয়েবসাইটে লেখা পাঠাতে পারেন।সৃজনশীলতাই কাম্য।


No comments

Powered by Blogger.