বন্ধু চাহিয়া আকুল আবেদন
সত্যি বলতে আমার স্কুল-কলেজ লাইফে আগ্রহী বন্ধুটাকে পেলাম না।যার শুধু আগ্রহ আর আগ্রহ। যাকে কিছুতেই দমিয়ে রাখা যায় না।যার স্বপ্ন নতুন পৃথিবী।যার ভাবনা সাগরের মত বিশাল। আমার বন্ধুদের মাঝে অনেক পড়ুয়াকে পেয়েছি।তবে "কিছু একটা করব" এমন মনোভাবের কাউকে পাইনি।অনেক মুভি খোর বন্ধুকে পেয়েছি। তবে "মুভি বানাবো" এমন মনোভাবের কাউকে পাইনি।তুখোর গেইমস খোরকে পেয়েছি। তবে "সেরা গেইমটা আমি বানাব"এমন মনোভাবের কাউকে পাইনি। প্রচুর গান শোনা বন্ধুটাকে পেয়েছি।তবে "আমিও সেরা এ্যালবামটি বানাব"এমন মনোভাবের কাউকে পাইনি।সাময়িক বিজ্ঞান মেলায় অংশ গ্রহন করা বন্ধুটার চোখেমুখে কৌতুহল দেখিনি। দেখেছি পুরস্কারের নেশা আর সেলফি তোলে সবাইকে দেখানোর প্রবল আগ্রহ।মানব সেবার জন্য চাঁদা তোলা ক্লাবের বন্ধুটার চোখে মানবতা দেখিনি। দেখেছি নেতা হওয়ার শখ আর প্রবল সাম্প্রদায়িক মনোভাব।প্রচুর গল্প উন্যাস পড়া বন্ধুটার চেহারায় পরিবর্তন দেখিনি।দেখেছি আবেগপরায়ণ হয়ে দমে যাওয়া মনোভাব।ধর্ম পরায়ণ বন্ধুটার চোখে সরলতা দেখিনি। দেখেছি ভীন্ন চিন্তায় কঠোর মনোভাব।মুক্তমনা বন্ধুটার চোখে সমতা দেখিনি। দেখেছি একমুখী বিপ্লবের প্রভাব।
আমি চশমা নেয়ার আগে আমার ডান চোখটা ট্যারা হয়ে যেতো।এই জন্য আমার বন্ধুরা আমাকে ট্যাগরা ট্যাগরা বলে ক্ষ্যাপাইতো। কিন্তু এর জন্য কখনো মারপিট করিনি।আমি জীবনেও হাত দিয়ে জগড়া করিনি।যদিও ক্লাশ ফাইভ পর্যন্ত ক্ষ্যাপে যেতাম। কিন্তু বোঝ হওয়ার পর থেকে আমি আর ক্ষ্যাপতাম না।শুধু হাসি দিয়ে স্থান ত্যাগ করতাম।তবে আমার স্মৃতিকথায় অগনিত বিকেল আছে। আমি সেইসব বিকেল গুলোয় শুধু এই কারনেই চুপিচুপি অনেক কাঁদতাম। কখনো কারো চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতাম না।কখন জানি চোখটা ট্যারা হয়ে যায় এই ভয়ে।মন খারাপ থাকতো তাই কাউকেই সঙ্গ দিতাম না।তখন এই মন খারাপের গাড়ীতে বসে বসে অনেক কিছু লিখতাম।বেশ কয়েকটা ডাইরী এখনো আছে, অনেক না বলা কথায় পরিপূর্ণ।মাঝেমাঝে ডাইরীগুলো এখনো দেখি আর অনেক হাসি।আমার মন খারাপে লেখাগুলোই এখন আমার অনুপ্রেরণার উৎস আর মন ভালো করার মহৌষধ। ওই সময়টাই আমাকে লেখক বানিয়েছিল। যদিও আমি বিন্দু পরিমাণ লেখকের মর্যাদায় পরিনা।আমি জানি লেখক হওয়া সহজ নয়।আর আমার মত অধম লেখক হওয়ার যোগ্যও নয়।লেখা হোক বা না হোক তবে এখন আবোল-তাবোল শতশত পৃষ্ঠাও এক বসায় লেখতে পারি।হোক না বস্তা পঁচা। এই সব কারনে আমার কারো সাথে খুব বন্ধুত্ব হয়ে উঠেনি।আর সত্যিই আমি কিছুটা ভীন্ন তাই কারো মুগ্ধতা বা প্রিয় পাত্রও হতে পারিনি।আমি বরাবরি অপ্রিয়।গতানুগতিক সমাজে অগ্রহনযোগ্যও বটে।
তবুও আজ সত্যিই বন্ধুটাকে মিস করছি।বন্ধুর অভাবটা অনুভব করছি।তাই এখন থেকে সীদ্ধান্ত নিলাম আমার সেই বন্ধুটাকে খোঁজে নিবো-যে পরিবর্তন চায়।যে আবিষ্কার করতে চায়।যে পেতে চায়না বরং দিতে চায়।আর আমার কাছে বন্ধুত্ব মানে আড্ডাবাজি আর পটাপটি নয়। আমার কাছে বন্ধুত্ব মানে আমরা একটি নতুন রাস্তা বানাব, আমরা মানবিক কল্যান টাওয়ার গড়ে তুলব।আমরা ঐ পাহাড়টি জয় করবো।আমরা বিজ্ঞান প্রেয়শীর গর্ভে নতুন শিশুটার জন্ম দিবো।আমি হবো বাপ তুই হবি চাচা অথবা তুই হবি বাপ আমি হবো চাচা।যেমন টা আমাদের গুগল মামা জন্ম নিয়েছে আমাদের ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিন নামক দুই নানার হাত ধরে।সুন্দরী ফেসবুক আপু জন্ম নিয়েছে জুকার কাকুর সহবাসে।
এসো বন্ধু আমরাও বিজ্ঞানের সাথে বাসা বাঁধবো-আর জন্মদিবো নতুন এক শিশুর।যা পৃথিবীর জন্য কল্যাণকর।আমাদের পৃথিবীটা হবে মানবিক।পৃথিবীর কাছে আমাদের কিছু চাওয়ার থাকবে না।বরং দেয়ার থাকবে অনেক কিছু।আমরা আমাদের মানবিক বিজ্ঞান ভিত্তিক মনোভাবটি কখনো বদলাবো না।যতই যা কিছু হই।আমরা শত কোটিবার ব্যর্থ হওয়ার পরেও হাল ছাড়বো না।সবাই আমাদের নিয়ে হাসলেও আমরা পাল্টে যাব না।আমাদের মুক্তভাবনায় জাতি,ধর্ম,বর্ণ,গোত্র,রাষ্ট্র কোন কিছুই প্রভাব ফেলবে না।আমরা খ্যাতির সাগরে ডুববো না। বরং আমরা সেবার সাগরে ডুববো।এই ডুবে আমাদের মৃত্যু হলেও তা মাথা পেতে মেনে নিবো।আছো কি এমন কেউ? এসো বন্ধুত্বের জাগরণে পৃথিবীকে উদ্ভাসিত করি।তারুণ্যের এ আহবান ....................


No comments