তুমি,আমি এবং আমাদের জীবনের সুখ দুঃখ



তুমি়,আমি এবং আমাদের জীবনের সুখ দুঃখ


জীবন কখনো থেমে থাকেনা।ঠিক সময়ের মতো।আমাদের কে হাঁটতে হয় অনেক দূর।মাঝে মাঝে হোচট খেতে হয় তাই দাড়াতেও হয়।আবার নতুন করে হাঁটা শুরু করতে হয়।তবে আমাদের মাঝে বেশির ভাগ মানুষই সামনের দিনগুলোর কথাই চিন্তা করি।আজকের দিনটার কথা কেউ চিন্তা করিনা।কিন্তু একটু ভেবে দেখলে দেখা যায়,আজ থেকে কয়েক বছর আগে আমরা আজকের দিনটার কথাই ভাবছিলাম।এখন নিজেকে প্রশ্ন করো-তুমি কি তোমার ইচ্ছে মতো আজকের দিনটি পেয়েছো? হয়তো বলবে পাওনি।আশার চেয়ে ভালো পেয়েছো না হয় খারাপ পেয়েছো।

মনের মতো কখনই কিছু হয়না।এটা চিরন্তন সত্য।"আমি একদিন সুখী হবো "এ কথা ভেবে আমরা আজকের দিনটাকেই নষ্ট করে ফেলছি।ইচ্ছে করলে হয়তো আমরা আজকের দিনটাকে সুখী করে নিতে পারতাম।ধরো তুমি অনেক খাটা খাটনির পরে একটা বিলাসবহুল বাড়ী বানালে।আজ বাড়িটার সব কাজ সম্পূর্ণ হলো।তাই তুমি নতুন বাড়ীতে থাকার জন্য তোমার ঘাম ঝরা টাকায় কেনা প্রাইভেট কারে করে রওয়ানা হলে কিন্তু নির্মমতার পরিহাস-পথে তোমার গাড়ী এক্সিডেন্ট হলো। ঘটনাস্থলে তোমার যমদূত হাজির হলো।তোমার হাজার হাজার দিন কে অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে বানানো বাড়িতে তোমার থাকা হলো না।কিন্তু তুমি ইচ্ছা করলে তোমার ছোট্ট ঘরটাতেও দিন কাটাতে পারতে পরম সুখে।অনেক উচ্চবিলাসীতার আশায় তুমি তোমার প্রকৃত সুখটাকেই হারালে।

তুমি তোমার জন্য সুন্দর একটা পৃথিবী গড়ো।দূর ভাবনায় কেন জীবনটাকে কাটিয়ে দিবে?তুমি হয়তো তোমার দাদার দাদা কে ছিলো তার নামটাও জানোনা।কিন্তু তুলনামূলক ভাবে ঐ মানুষটার জায়গা সম্পত্তি তোমার বাবার থেকে কয়েকগুণ বেশি ছিলো।কিন্তু পৃথিবীতে সেই মানুষটার নাম নেয়ার মতো এখন কেউ নেই।একদিন তোমার নামটা নেয়ার মতো হয়তো কেউ থাকবে না।তাহলে কেনো মিছে মিছে এতো বিশাল আয়োজন? কেন এতো অসুন্তুষ্টি?কেন এতো খাই খাই?যদি একটুকরো মাছ খেয়ে তোমার শারীরিক পুষ্টি অর্জন হয় তবে কেনো এতো রোস্ট,কাবাব? ৪২পদের তরকারি? 

বরং নিজের সঠিক চাহিদা টুকু রেখে বাকিটা অভাবি মানুষটাকে দিয়ে দাও।তখন হয়তো পৃথিবীটা ক্ষিদে মুক্ত সুন্দর হবে।নিজের দৃষ্টিকে আরো সুন্দর করো, দেখবে পৃথিবীটা সুন্দর হয়ে গেছে।আজ থেকে নিজেকে পরিবর্তন করা শুরু কর, দেখবে একদিন পৃথিবীটা সুন্দর হয়ে যাবে।তুমি সেদিনই প্রকৃত সুখী হতে পারবে যেদিন অন্যের সুখে তোমার মুখে হাসি ফুটবে।পৃথিবীটাকে প্রতিযোগীতা না ভেবে সহযোগীতা ভাবো।শিক্ষাকে শুধু বই পুস্তক আর সার্টিফিকেটে সীমাবদ্ধ না রেখে জীবন সাজানোর কাজে লাগাও।শিক্ষা কি শুধু বড় চাকরী আর টাকা রুজি করার জন্য? শিক্ষা জীবনের জন্য। শিক্ষা অমানুষ থেকে মানুষ হওয়ার জন্য।তোমার নিজের বিবেক কে প্রশ্ন কর তুমি কতটুকু শিক্ষিত।

বন্ধু, সুখ বেশী দূরে নয়,সুখ তোমার নাকের ডগায়।খুজে দেখো পেয়ে যাবে।প্রতিদিন বাহির থেকে বাসায় ফেরার পথে আমি খুব সাবধানে পা ফেলি।যেন পথে পরে থাকা বর্ণমালা গুলো একটাও আমার পায়ের নিচে না পরে।কারন যে বর্ণমালায় আমি সুখ-দু:খ প্রকাশ করি।যে বর্নমালায় আমার সকল অনুভব সে বর্নমালাকে কি করে আমি পদতলে দেই? বর্নমালা আমার হৃদয়ে থাকে। তাকে অসম্মান করে আমি কি করে নিজেকে সভ্য মানুষ বলি? 

তাই বন্ধুরা আজ থেকে আমরা রাস্তায় লেখা ওয়ালা কোন কাগজ ফেলবো না এবং ভাষা সম্বলিত কোনো কাগজ পায়ের নিচে পিষে ফেলব না।আমরা আমাদের তিলে তিলে এক এক করে শুদ্ধ করে নিবো।পাশের অনেকেই অনেক কটূ কথা বলবে।পরিহাস করবে।তাতে আমাদের কি? আমরা সঠিকটাই করবো।তবেই মনে প্রশান্তি পাবো।আমরা হবো সুখী।সাময়িক ভাবে মনে হবে আমরা ঠকে গেছি বা পরাজিত হয়েছি।তবে মহাসত্যের বিচারে আমরাই প্রকৃত জয়ী।নষ্ট যখন পৃথিবী নষ্ট যখন চারিদিক।তখন হয়ে যাকনা সত্য সুন্দরের আবির্ভাব।হয়তো একদিন আমরা বেচে থাকতে সুন্দর পৃথিবী দেখব না তবে পৃথিবী সুন্দর একদিন হবেই।আর সেই সুন্দরের মাঝে বেচে থাকব- তুমি,আমি এবং আমরা।সুখী হওয়ার জন্য প্রচুর সম্পদের প্রয়োজন নেই বরং সীমিত সম্পদ আর সত্য সুন্দর মানষিকতাই যথেষ্ট।

৷আপনার মতামত কাম্য৷

লেখা:নাঈম আজিজ চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.